নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন প্রদত্ত অটোরিক্সার ব্লু বুক আটকে রেখে দফারফার জন্য বার বার বিসিসিকে তাগিদ দিচ্ছে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগ। এমনকি বিসিসি’র কাছে মাসিক মাসোয়ারা দেয়ার জন্য বলছে তারা। অথচ সেই অটোরিক্সার টোকেন আটকে রাখার কোন অনুমোদন নেই তাদের। আর বিসিসি কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় অটো রিক্সা চালক মালিকগণ পড়েছেন বেকায়দায়। এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই ব্যাটারি চালিত রিক্সা (মেট্রোরিক্সা) আটক করছে ট্রাফিক বিভাগ। ঋণগ্রস্ত মেট্রোরিক্সা চালকগণ বলছেন, অটোরিক্সা যদি ট্রাফিক বিভাগের সাথে বিট চুক্তিতে যেতে পারে তাহলে আমাদেরকেও সেভাবে বিট করে চলার ব্যবস্থা করুন না হয় রিক্সাগুলো ছেড়ে দিন। বিসিসির যানবাহন শাখার এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলছে, আমরা একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানকেতো আর বিট (মাসোয়ারা) দিতে পারি না। তাছাড়া তারা কিসের বলে অটোরিক্সার ব্লু-বুক আটকে রেখেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত প্রায় দুই মাস পূর্বে হঠাৎ করেই বরিশাল নগরীতে চলাচলকৃত অটোরিক্সার ব্লু-বুক (বিসিসি প্রদত্ত লাইসেন্স) আটক করতে শুরু করে। এ যাবত তারা প্রায় ৫ শতাধিক ব্লু-বুক আটক করেছে। একাধিক অটো মালিক জানান, ব্লু-বুক আটকে রেখে তাদের কাছ থেকে ৫শ’ টাকা করে নিয়ে একটি রশিদ দিয়েছে। তারা বলেন, গত জুলাই মাসে অটোরিক্সার লাইসেন্স নবায়ন করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। যার মেয়াদ আগামী বছর জুন মাস পর্যন্ত। অথচ কোনরুপ ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে ট্রাফিক বিভাগ তাদের কাছ থেকে ব্লু-বুক গুলো আটক করে। এতে করে বিপাকে পড়েন চালক ও মালিকগণ। তারা বলছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স থাকা সত্বেও তারা সদর রোডে ঢুকতে পারছে না। তারপরেও তারা জীবিকার তাগিদে অলিগলিতে চলাচল করছে। অথচ বরিশাল নগরীর বিভিন্ন অটোস্ট্যান্ডে লাইসেন্সবিহীন অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার অটো চলাচল করছে। তাদের প্রশ্ন লাইসেন্স থাকা সত্বেও তাদের ব্লু-বুকগুলো কেন ট্রাফিক বিভাগ আটক করছে? এ ব্যাপারে বিসিসির যানবাহন শাখায় যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ট্রাফিক বিভাগ থেকে মাসিক একটা বিটমানি দাবী করছে। এমনকি তারা ৫শ’ থেকে ৬শ’ ব্লু-বুক আটকে রেখে বিসিসির কাছে ৮ লাখ টাকা দাবী করার পাশাপাশি তাদের সাথে বসার জন্য বলছে। তিনি বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান কিভাবে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে বিটমানি চুক্তি করে?
এ ব্যাপারে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) রাসেল এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে পরে যোগাযোগ করতে বলেন।
ব্লু-বুক আটকের কথা স্বীকার করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছেও একাধিক অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া এ ব্যাপারে ট্রাফিক বিভাগকে এক মাস পূর্বে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply